What is accounts receivable | প্রাপ্য হিসাব কি? বিস্তারিত।

প্রাপ্য হিসাব কি

প্রাপ্য হিসাব বলতে কি বুঝ?

প্রাপ্য হিসাব (Accounts Receivable) হলো সেই অর্থ যা কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহকদের কাছে পণ্য বিক্রি বা সেবা প্রদানের জন্য ভবিষ্যতে পাবে। সহজভাবে বলতে গেলে, যখন কোনো কোম্পানি ধারে পণ্য বিক্রি করে বা সেবা দেয় এবং গ্রাহক তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ পরিশোধ না করে, তখন সেই অর্থই হলো প্রাপ্য হিসাব।

প্রাপ্য হিসাবের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক:

  • এটি একটি চলতি সম্পদ (Current Asset), কারণ এই অর্থ সাধারণত এক বছরের মধ্যে আদায় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • প্রাপ্য হিসাব ব্যবসায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তারল্য (liquidity) এবং কার্যকারী মূলধনের (working capital) অংশ।
  • এই হিসাব ডেবিট ব্যালেন্স (Debit Balance) হিসেবে সাধারণ খতিয়ানে (General Ledger) লিপিবদ্ধ করা হয়।

প্রাপ্য হিসাবকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়:

  • প্রাপ্য হিসাব (Account Receivable): এটি ধারে পণ্য বিক্রি বা সেবা প্রদানের ফলে সৃষ্ট সাধারণ প্রাপ্য অর্থ। এর আদায়ের মেয়াদ সাধারণত ৩০ থেকে ৬০ দিন হয়ে থাকে।
  • প্রাপ্য নোট (Notes Receivable): এটি ধারে পণ্য বিক্রি বা সেবা প্রদানের বিপরীতে একটি আনুষ্ঠানিক লিখিত প্রতিশ্রুতিপত্র, যেখানে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অর্থ পরিশোধের অঙ্গীকার থাকে। এর আদায়ের মেয়াদ ৩০ দিন থেকে ৯০ দিন বা তার বেশি হতে পারে।
  • অন্যান্য প্রাপ্য হিসাব (Others Receivable): ব্যবসার স্বাভাবিক কার্যক্রমের বাইরে অন্যান্য কারণে সৃষ্ট প্রাপ্য অর্থ এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন:
    • প্রাপ্য সুদ (Interest Receivable)
    • প্রাপ্য কমিশন (Commission Receivable)
    • কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের দেওয়া ঋণ
    • কর্মচারীদের অগ্রিম বেতন

কাদেরকে প্রাপ্য হিসাব বলা হয় ?

প্রাপ্য হিসাব হলো সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যারা একটি ব্যবসায়ের কাছে ধারে পণ্য বা সেবা ক্রয় করেছে এবং ভবিষ্যতে এর মূল্য পরিশোধ করবে। সহজ ভাষায়, যাদের কাছে ব্যবসা টাকা পায়, তারাই হলো প্রাপ্য হিসাবের অন্তর্ভুক্ত।

কাদেরকে প্রাপ্য হিসাব বলা হয় তার কয়েকটি উদাহরণ:

  • ধারে পণ্য ক্রয়কারী গ্রাহক: যদি কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি আপনার কাছ থেকে বাকিতে পণ্য কিনে থাকে, তবে সেই ব্যক্তি বা কোম্পানি আপনার প্রাপ্য হিসাব। যতক্ষণ না তারা সেই পণ্যের মূল্য পরিশোধ করছে, ততক্ষণ তারা আপনার দেনাদার এবং আপনার জন্য প্রাপ্য হিসাব।
  • ধারে সেবা গ্রহণকারী গ্রাহক: একইভাবে, যদি কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি আপনার কাছ থেকে কোনো সেবা গ্রহণ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তার মূল্য পরিশোধ না করে, তবে সেই ব্যক্তি বা কোম্পানিও আপনার প্রাপ্য হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে।
  • অন্যান্য দেনাদার: ব্যবসার স্বাভাবিক কার্যক্রমের বাইরেও যদি কেউ কোনো কারণে আপনার কাছে অর্থ owes, তবে তারাও প্রাপ্য হিসাব হিসেবে গণ্য হতে পারে। যেমন, যদি আপনি আপনার কোনো কর্মীকে অগ্রিম বেতন দিয়ে থাকেন, তবে সেই অগ্রিম বেতনের অংশ যা এখনো অর্জিত হয়নি, তা আপনার জন্য প্রাপ্য হিসাব হতে পারে। অথবা, যদি আপনি কাউকে ঋণ দিয়ে থাকেন, তবে সেই ঋণের অর্থ এবং তার সুদও আপনার প্রাপ্য হিসাব।

কেন প্রাপ্য হিসাবের প্রয়োজন:

প্রাপ্য হিসাবের প্রয়োজনীয়তার মূল কারণগুলো হলো:

  • ধারে বিক্রয়ের সুবিধা: অনেক ব্যবসা তাদের গ্রাহকদের ধারে পণ্য বা সেবা কেনার সুযোগ দেয়। এর ফলে গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে এবং ব্যবসার বিক্রয় বৃদ্ধি পায়। এই ধারে বিক্রয়ের হিসাব রাখতেই প্রাপ্য হিসাবের প্রয়োজন। যদি এই হিসাব না রাখা হয়, তবে কোন গ্রাহকের কাছে কত টাকা পাওনা আছে তা নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
  • নগদ প্রবাহের পূর্বাভাস: প্রাপ্য হিসাব ভবিষ্যতের নগদ প্রবাহের একটি ধারণা দেয়। ব্যবসা জানতে পারে কখন কোন গ্রাহকের কাছ থেকে কত টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। এই তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবসা তার দৈনন্দিন খরচ, নতুন বিনিয়োগ এবং অন্যান্য আর্থিক পরিকল্পনা করতে পারে।
  • আর্থিক ব্যবস্থাপনার মূল ভিত্তি: প্রাপ্য হিসাব একটি প্রতিষ্ঠানের চলতি সম্পদের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর সঠিক ব্যবস্থাপনা ব্যবসার তারল্য (liquidity) বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিতভাবে প্রাপ্য হিসাব পর্যবেক্ষণ এবং বকেয়া অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।
  • গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা: প্রাপ্য হিসাবের মাধ্যমে কোন গ্রাহক নিয়মিতভাবে বিল পরিশোধ করছেন এবং কারা করছেন না, সেই তথ্য পাওয়া যায়। এর ফলে ব্যবসা ভালো গ্রাহকদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে এবং যারা দেরিতে পরিশোধ করেন তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে।
  • ঋণ ঝুঁকি মূল্যায়ন: প্রাপ্য হিসাবের তথ্য বিশ্লেষণ করে ব্যবসা তার ঋণ প্রদানের নীতি কতটা কার্যকর তা বুঝতে পারে। কোন গ্রাহকদের ক্রেডিট দেওয়া উচিত এবং কাদের দেওয়া উচিত নয়, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এই তথ্য সাহায্য করে। বকেয়া অর্থের পরিমাণ বাড়তে থাকলে ব্যবসার ঋণ ঝুঁকিও বাড়ে।
  • আর্থিক বিবরণীর নির্ভুলতা: প্রাপ্য হিসাব সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা না হলে আর্থিক বিবরণী যেমন ব্যালেন্স শীট এবং আয় বিবরণী ভুলভাবে উপস্থাপিত হবে। এর ফলে ব্যবসা এবং বিনিয়োগকারীরা প্রতিষ্ঠানের সঠিক আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে না।

আইনি সুরক্ষা: ধারে বিক্রয়ের সময় যদি কোনো চুক্তিপত্র থাকে, তবে প্রাপ্য হিসাবের নথি সেই চুক্তির প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। বকেয়া অর্থ আদায়ের জন্য আইনি পদক্ষেপ নিতে হলে এই নথিগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

For more informatio :

অর্থনীতি ও বানিজ্যিক ভূগোল এর ফাইনাল সাজেশন||PDF

অর্থনীতি ও বানিজ্যিক ভূগোল ফাইনাল সাজেশন: পরীক্ষার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সব শিক্ষার্থীর জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি, বিশাল সিলেবাসের

Read More »

এমপিও শিক্ষকদের স্বয়ংক্রিয় বদলী সফটওয়্যার চালু। নীতিমালা ও শর্তাবলী -২০২৫।

এমপিও শিক্ষকদের বদলী নীতিমালা-২০২৫ এমপিওভুক্ত কারিগরি শিক্ষকদের সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে প্রতি প্রতিষ্ঠান থেকে দুইজন শিক্ষকের

Read More »

What is relevant cost analysis ? প্রাসঙ্গিক ব্যয় বিশ্লেষণ কি ?

ব্যবস্থাপনা হিসাববিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলো প্রাসঙ্গিক ব্যয় বিশ্লেষণ (Relevant Cost Analysis)। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কার্যক্রমে

Read More »

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top